কোয়েল পালন
কোয়েল পালনে কবুতরেরমতোনির্দিষ্ট ঘর যেমনপ্রয়োজন হয় না আবার মুরগির মতো ব্যাপক আকারের খামারেরও প্রয়োজননেইতাই কোয়েল পালন আজকাল অনেক ব্যাপক হয়েউঠেছে

বিভিন্ন গৃহপালিত পাখির মধ্যে সবচেয়েক্ষুদ্র প্রজাতিকোয়েলের আদি জন্মস্থানজাপানেসর্বপ্রথম জাপানী বিজ্ঞানীরা কোয়েলকেগৃহপালিত পাখি হিসেবে পোষ মানানোরউপায় উদ্ভাবন করেছেনপরবর্তীতে জাপান সহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশেকোয়েলকে একটিলাভজনক পোলট্টিউপাদান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছেকোয়েল পালন করার জন্য অতিরিক্তবাবাহুল্য কোন খরচ হয়নাকোয়েলকে সহজেই পোষ মানানো যায়বাড়ির যেকোন কোণ বা আঙিনাঅথবা বাড়ির ছাদ ইত্যাদি জায়গাতেও কোয়েলপালন করা যায়এই কারণে, শহরে কী গ্রামেঅনেক স্থানেই কোয়েল পালন ব্যাপক ও সহজতরহয়েছেগৃহপালিত পাখির মধ্যে অতিক্ষুদ্রএই পাখির আয়তন খুববেশি নয়একটি মুরগি পালনের স্থানে মোটামুটিভাবে১০টি কোয়েল পালনকরাযায়

বিষেজ্ঞদের দ্বারা প্রমাণিত হয়েছেবাংলাদেশের আবহাওয়া কোয়েল পালনেরজন্য সর্বাধিক উপযোগিএই কারণে, বিভিন্ন হাস মুরগির খামারেও ইদানিং কোয়েলপালনব্যাপকভাবে সাড়াজাগিয়েছেদেশের পুষ্টি মিটিয়ে ইদানিং কোয়েলের মাংসবিদেশেওরপ্তানীহচ্ছে

কোয়েলের মাংস ও ডিম খুবইসুস্বাদুএদের মাংস ও ডিমেপর্যাপ্ত পরিমাণ আমিষ, প্রোটিন ও স্নেজাতীয় পদার্থবিদ্যমানবিশেষ করে কোয়েলেরএকটি ক্ষুদ্র ডিমে যে পরিমাণ প্রেটিনরয়েছে একটি বড়ো আকারের মুরগির ডিমেও প্রায় সেইপরিমাণ প্রোটিন বিদ্যানঅথচ, দামের দিক থেকে একটি মুরগির ডিমের বিনিময়েচারটিকোয়েলের ডিম পাওয়াযায়এই কারণে, আমাদের মতো গরীব দেশের নিজস্ব পুষ্টিরচাহিদামেটাতে কোয়েলউল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে
আমাদের বাংলাদেশে কোয়েল পাখিএখনওনবাগত সম্প্রদায়েরতালিকায় পড়েতাই এই পাখি সম্পর্কে একটা অন্যরকম ধারনাআমাদেরমধ্যেবিদ্যমানআমরা অনেকেই কোয়েলের ডিম এবং মাংসেরপুষ্টিকর দিকগুলো সম্পর্কেজানি নাক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সাদা কালোর ফুটকি দেয়াডিম এবং একই রঙ্গের পাখি সম্পর্কেআমাদের অনেক ভূল ধারণা রয়েছেঅনেকে ছোট ডিম বলে এগুলোকে কচ্ছপের ডিমেরসাথে তুলনাকরেথাকেনফলে এগুলো খেতে তাদের রুচি হয়নাকিন্তু বিষয়টা সম্পূর্ণ ভিন্নপার্থক্যগত দিক বিবেচনা করলে একটি কোয়েলেরডিমে সমপরিমাণ একটি মুরগির ডিমের মতোপুষ্টিমান বিদ্যামনতবে আশার কথা, আমাদের দেশের কিছু কিছু অঞ্চলে ইদানিংকোয়েলপালনে উৎসাহী হয়েউঠেছেন অনেকেইঢাকা শহরের বঙ্গবাজার এলাকার পোল্ট্রিমার্কেটেকোয়েলেরডিম, বাচ্চা এবং পরিণত বয়সের কোয়েল কিনতে পাওয়াযায়এখান থেকে এগুলোসংগ্রহ করে ভাড়া বাসায় স্বল্প পরিসরেওকোয়েল পালন করা সম্ভব

ইদানিং আমাদেরদেশের বিভিন্ অঞ্চলে হাঁস মুরগির খামারেরপাশাপাশি কোয়েলের খামার তৈরী হয়েছে এবংপ্রতিদিন হচ্ছেঅনেকে হাস মুরগির খামার না করেও শুধুকোয়েলের খামার করেঅর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেনএর মাংস এবং ডিম বিদেশে রপ্তানী করে অধিকমুনাফাঅর্জন করাসম্ভব

কোয়েল পালনের বিভিন্নসুবিধা সমূহ

কোয়েল পালন করলে অসুবিধার চেয়ে সুবিধারপরিমাণ বেশিপরবর্তীতে কোয়েল পালনের বিভিন্নসুবিধাসমূহ উল্লেখ করা হলো

(
১) সাধারণতএকটি ভাল জাতের কোয়েল বছরে ২৫০ থেকে ৩০০টিডিম প্রদানে সক্ষম হয়ে থাকেএই ডিমগুলোরপ্রায় প্রতিটি থেকেই বাচ্চা পাওয়াযায়এই বাচ্চা পরবর্তীর ৬ থেকে ৭সপ্তাহেরমধ্যেই খাওয়া বাবিক্রির উপযোগী হয়পাশাপাশি এই বয়সে তারা ডিমদেয়া শুরু করতেপারে

(
২) অত্যন্ত কম পুজি নিয়ে কোয়েলের খামারতৈরি করা যায়কোয়েল পালনকরতে বিশেষ কোন জায়গা বা বিশেষ কোন থাকারস্থান নির্বাচন করতে হয় না

(
৩)কোয়েলের আকার ক্ষুদ্র বলে এদের লালনপালনের জন্য বিস্তৃত জায়গা প্রয়োজন হয় নাছোটআকারের একটি খাচাতেই কোয়েল পালন করাযায়একটি প্রমাণ সাইজের মুরগির জন্য যেপরিমাণজায়গা প্রয়োজনহয়সেই একই জায়গা কমপক্ষে ১২টি কোয়েল পালনকরা যায়

(
৪) রোগব্যাধির দিকে থেকে কোয়েল খুবই লাভজনকবিনিয়োগকারণ, কোয়েলের রোগ ব্যাধি প্রায় হয়না বললেই চলেযেহেতু কোয়েলের রোগ ব্যাধি কম হয় সুতরাংএদের জন্য বাড়তি চিকিৎসাব্যবস্থার তেমন প্রয়োজন হয় না

(
৫) খুবই অল্প সময়ের মধ্যে একটিবাচ্চাকোয়েল ডিম দিয়েথাকেসাধারণত ৬ থেকে ৭ সপ্তাহ বয়সেই একটি কোয়েলডিম প্রদান করেথাকেএদের ডিম খুব সুস্বাদু ওপুষ্টিকরপুষ্টিমানের দিক থেকে মুরগির ডিমেরসাথেতা তুলনীয়

(
৬) কোয়েলের জন্য বিশেষ কোন খাবার সরবরাহকরতে হয় নাএদেরখাদ্য চাহিদা কম অথচ, শারীরিক বাড় খুব বেশিএরা খুব দ্রুত বাড়তে পারেদিনে ২০থেকে ৩০ গ্রাম খাবার দিলেই এরা এদেরশারীরিক ঘাটতি পুষিয়ে নিতে পারে

(
৭)একটি পরিণত বয়সের কোয়েল বছরে ২৫০ থেকে৩০০টি ডিম প্রদান করতে পারেসেই হিসেবে একটিকোয়েলের পেছনে যে টাকা বিনিয়োগ করা হয় সেইটাকা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই লাভসহ ফেরতপাওয়া যায়

(
৮) কোয়েলের ডিম থেকে সর্বোচ্চ ২০ দিনেরমধ্যেই বাচ্চা ফুটে বেরহয়এই বাচ্চা পরিণত কোয়েলে রূপান্তরিত হতেসময় লাগে ৬ থেকে ৭ সপ্তাহ

(
৯)কোযেলের মাংসে চর্বির পরিমাণ খুব কম বলেযে কোন রোগীর পথ্য হিসেবে কোয়েলের মাংসব্যবহৃত হতে পারেকোয়েলের ডিম পর্যাপ্ত পুষ্টির চাহিদাওমেটাতে পারেএই কারনেবাণিজ্যিক ভিত্তিতে কোয়েল পালন অত্যন্তলাভজনক পদ্বতি

কোয়েলের জাত বা বংশ
কোয়েলের জাত হিসেবেপ্রথমেই উল্লেখ করতে হয় জাপানিকোয়েলকেকারণ, জাপানেই কোয়েলক সর্বপ্রথমগৃহপালিতকরাহয়েচেজাপানের হিসেবে অনুযায়ী কোয়েলের কয়েকটিজাত এবং উপাজত রয়েছে, সেগুলোনিম্নরূপ-

লেয়ার কোয়েলঃ মুরগির মতো কোয়েলের মধ্যেওলেয়ার জাত বিদ্যমানএইজাতের উল্লেখযোগ্য গোষ্টিহলো-ফারাও, ইংলিশ হোয়াই, ম্যানচিরিয়াল গোল্ডেন, ব্রিটিশরেঞ্জ ইত্যাদিএই জাতের কোয়েলকে শুধু ডিম প্রদানের জন্যপালন করা হয়ে থাকে

ব্রয়লার কোয়েলঃ মুরগির মতো কোয়েলের মধ্যেব্রয়লার জাত বিদ্যমান এই জাতেরউল্লেখযোগ্য গোষ্টি হলো আমেরিকান ববহোয়াইট কোয়েলে ইন্ডিয়ান হোয়াইট ব্রেস্টেড কোয়েলইদ্যাদিএই জাতের কায়েলকে শুধু মাংসের জন্য পালনকরা হয়ে থাকে

একটিপূর্ণবয়স্ক কোয়েল সর্বোচ্চ ৪ বছর বেচেথাকেএই বয়সের মধ্যে সে অন্ততপক্ষে ৮০০থেকে১২০০ ডিম প্রদান করেথাকেএকটি পূর্ণাঙ্গ কোয়েলের ওজন ১৫০ থেকে ২৫০গ্রাম পর্যন্তহতেপারেডিমের ওজন হয়ে থাকে ৮ থেকে ১২গ্রামকোয়েলের ডিম দেখতে খুব সুন্দরকারুকার্যখচিত বলে মনে হয়এরেদ ডিমের খোসার ওপর নীল, বেগুনী, খয়েরি এবং কালোরঙ্গের ছোট ছোট পোটা বা ছিট ছিট দাগথাকেঅনেকে এই দাগের জন্য এই ডিমগুলোখাওয়ারপ্রতি অনীহা প্রকাশকরে থাকেনকোয়েলের প্রতিটি ডিমই আসলে ভবিষ্যতেরপূর্ণাঙ্গবাচ্চাঅর্থাৎ প্রতিটি ডিম থেকেই একটি বাচ্চাফুটতে পারেতবে বাচ্চাপ ফোটার জন্যডিম তৈরি করতে হলে একটি পুরষ কোয়েলের সাথেতিনটি স্ত্রী কোয়েলকে কিছুদিন একসাথেরাখতে হবেকোয়েলের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর জন্যইনকিউবেটর ব্যবহার কা হয়তবেযাদের ইনকিউবেটরন নেই তারা সাধালনত কুচ্ছেমুরগির পেটের তলে দিয়ে বাচ্চা ফুটিয়েথাকেনকারণ কার্যত কোয়েল পাখি কখনও কুঁচ্চে হয়নাফলে কোয়েলের ডিম থেকে বাচ্চাফোটাতে কুঁচ্চে মুরগির কিংবা ইনকিউবেটরেরসহায়তা নিতে হয়

ডিম থেকে বাচ্চাফুটতে ১৭ থেকে ১৮ দিন পর্যন্ত সময় লাগতেপারেতবে বাচ্চা ফোটার পরই সেগুলোপরিবেশের সাথে সরাসরি মানিয়ে নিতে পারেনাকারণ, কোয়েলের বাচ্চা খবই সংবেদনশীলএরা পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে কমপক্ষে ১০থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত সময় নেয়এই সময়টাতেবাচ্চার প্রতি বিশেষ যত্নবান হতেহয়এইসময় বাচ্চাকে কোয়েলের সাধারণ খাচাথেকেসরিয়ে ব্রুডিং ঘরে নিয়েযাওয়া ভালকারণ, সেই সময় বাহ্যিক উত্তাপ প্রয়োজনহয়বাচ্চারব্রুডিং পদ্ধতিতে বাচ্চার শরীর সেই সময়গরম করতে হয়

কোয়েলের থাকার জায়গা বাবাসস্থান

কোয়েলেরথাকার জন্য হাঁস মুরগির মতো বিশেষ কোনব্যবস্থা নিতে হয় নাতবে অন্য সবগৃহপালিতপশু পাখির মতো তাদেরবাস্থান যাতে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের মধ্যে থাকে সেদিকে লক্ষ্যরাখা বিশেষ প্রয়োজন

লিটার বা খাঁচায় কোয়েল পালন করা সবচেয়েযুক্তিযুক্তএকটি খাঁচার ওপর আরেকটি খাচা এভাবেমোটামুটিভাবে অল্প জায়গাতে অনেকগুলো খাচা স্থাপনকরে কোয়েল পালন করা যায়মোটামুটিভাবে ১৩০ থেকে ১৫০ সেন্টিমিটারদৈর্ঘ্য, ৬০ থেকে১০০ সিন্টিমিটার প্রস্থ এবং ২৫ থেকে ৪০সেন্টিমিটার উচ্চতা বিশিষ্ট একটি খাচায়কমপক্ষে ৬০ থেকে ১০০টি কোয়েল পালন করাযায়তবে কোয়েলের খাচায় ব্যবহৃতজালেরফাকগুলো একটু ঘন হতেহবেযাতে করে কোয়েলের মুখ বা গলা সেই ফাক দিয়েবাইরে বেরিয়েনাআসেসর্বোপরি বাচ্চা রাখার খাচাসহ পরিনত বয়সেরকোয়েলের খাঁচাগুলোতে যেন ইদুর, ছুচো ইত্যাদি না ঢুকতে পারে-সেদিকে লক্ষ্যরেখে খাঁচার ফাঁক তৈরি করতে হবে
কোয়েলের জন্য খাবার এবং পানির সুব্যবস্থাতার খাঁচাতেই রাখতে হবেতবে লক্ষ্যরাখতে হবে-পানি খাবার বা রাখার পাত্রউল্টে যেন কোয়েলের গা ভিজে না যায়

ঘরের যেখানে পর্যাপ্ত আরো বাতাসেরব্যবস্থা রয়েছে-সেখানে কোয়েলের খাঁচারাখা যেতে পারেতবে লক্ষ্য রাখতে হবে-বৃষ্টির পানি বাঅন্য কোন তরলপদার্থ দ্বারাকোয়েলের খাঁচা ভিজে না যায়ভেজা স্থান কোয়েলের স্বাস্থ্যের জন্যমারাত্নকহুমকিস্বরূপখাবার পাত্র এবং পানি রাখার পাত্রগুলোমুরগির খামারের মতোই হবে-তবেসেগুলো আকারে ছোট হলেও অসুবিধানেই

কোয়েলের বাচ্চা পালনের সময়একটিঅতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজনহয়এই সময় বাচ্চাকে ব্রুডিং এর ব্যবস্থা করতেহয়বাচ্চারবয়স ১৪ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত কৃত্রিমউত্তাপের মাধ্যমে এই ব্রুডিং এর ব্যবস্থা করতেহয়কারণ, ডিম থেকে ফোটার পর বাচ্চা উক্ত সময়পর্যন্ত খুবই স্পর্শকাতর এবং দুর্বলথাকেএই সময় তাদেরকে প্রয়োজনীয় ক্যালোরিযুক্তখাবারও প্রদান করতে হয়তা না হলেসদ্যজাত বাচ্চা ক্যালোরির অভাবে শরীরঠান্ডা হয়ে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়তে পারে

সাধারণভাবে বাচ্চা ফুটলে সেগুলোকে আলাদাখাঁচায় স্থানান্তর করা উচিতকারণ, তাহেল বাচ্চার জন্য প্রয়োজনীয় ব্রুডিং এরব্যবস্থা করা সম্ভবপর হয়ে থাকেমুরগিরবাচ্চার মতো একই পদ্ধতিতে কোয়েলেরবাচ্চাকে ব্রুডিং বা কৃত্রিম তাপ প্রদান করারপ্রয়োজন হয়ে থাকেবড়ো আকারের কোয়েলের খামারে বাচ্চা রাখারজন্য আলাদা ব্রুডারখাঁচাতৈরি করা হয়ে থাকেযাতে করে বাচ্চা ডিম ফুটেবের হবার প্রায় সাথে সাথে সেইখাঁচায় বাচ্চা স্থানান্তর করাযায়

মোটামুটিভাবে কোয়েল পালনের জন্যএইধরণের বাড়তি যত্ন আরবাসস্থান প্রয়োজন হয়তবে হিসেব করে দেখা গেছে১০০টি মুরগিরজন্য যে ধরনেরব্যাপক বাসস্থানের প্রয়োজন হয়-সেই ধরনের জায়গায় কমপক্ষে ১০০০ থেকে১২০০ কোয়েল পালন করা সম্ভবপর হয়েথাকে

কোয়েলের খাদ্য বা খাবারব্যবস্থা

কোয়েলপালনে তেমন খরচ নেই এই কারণেই বলা হয়েথাকে যে, কোয়েলের জন্য আলাদা তেমন কোনসুষমখাদ্যের প্রয়োজন হয়নাশুধুমাত্র ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হবারপর কিছুটা বিশেষযত্ন প্রয়োজনহয়এইসময় কোয়েলের বাচ্চাকে সুষম খাদ্য প্রদানকরতে হয়

সাধারণভাবে একটি পূর্ণাঙ্গ বয়সের কোয়েলদিনে ২০ থেকে ২৫ গ্রাম পর্যন্তখাবার গ্রহণ করতে পারেএদের খাদ্যে আমিষ ও ক্যালোরির পরিমাণনিম্নোক্ত হওয়া উচিতসাধারণভাবে প্রতি কেজি খাদ্যঅনুপাতে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ আমিষ এবং ২৫০০ থেকে ৩০০০কিলোক্যালোরি বিপাকীয় শক্তি বিদ্যমান থাকাপ্রয়োজনসাধারণভাবে হাস মুরগির যেখাবারসরবরাহ করা হয়ে থাকেতার মধ্যেই এই ধরনের আমিষ এবং ক্যালোরি বিদ্যমানসুতরাং হাসমুরগির জন্য যে খাবার আনা হয় তার থেকেওখাবার প্রদান করে কোয়েল পালন করা যায়

মুরগির খামারে ব্যবহৃত আকারে একটু ছোট হলেভাল ৃহয়তবে কোয়েল খুব ঘন ঘনপানি পান করেতাই কোয়েলের খাচায় কয়েকটি স্থানে পানিরব্যবস্তা খাকতে হবেতবেলক্ষ্য রাখতে হবে পানির পাত্রগুলো যেনখাঁচার সাথে শক্ত করে আটকানো থাকেযাতেপানির পাত্র উপচে বা উল্টে পড়ে কোয়েলের গাভিজে না যায়

কোয়েলের স্বাস্থ্য রক্ষা

ককুতরের মতোকোয়েলেরও তেমন কোন রোগ ব্যাধি নেই বললেইচলেতবে মাঝে মাঝে কোয়েলকে রোগক্রান্তহতেধেখা যায়কোয়েল রোগাক্রান্ত হলে সাথে সাথেডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে

কোন কোয়েল অসুস্থ হলে সাথে সাথে তাকেসুস্থ কোয়েলের খাঁচা থেকে সরিয়ে নিতেহবেঅসুস্থ্য কোয়েলের সংস্পর্শে থাকলে বাকিসুস্থ কোয়েলও আক্রান্ত হতে পারে

খাঁচায় কোন কোয়েল মারা গেলে সাথে সাথে তারকারণ অসুসন্ধান করতে হবেমরাকোয়েল পুড়িয়ে বা পুতে পেলতেহবে

কোয়েলের বিভিন্ন রোগ ব্যাধির মধ্যেআমাশয়উল্লেখ্যযোগ্যএই রোগ হলে কোয়েলের ঘন ঘন পায়খানাহয়, খাবার গ্রহনে অনীহা দেখা দেয়পাশাপাশি কোয়েলের স্বাস্থ্য খারাপ হতেথাকেএই অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শঅনুযায়ীএম্বাজিন জাতীয় ঔষধখাওয়ানো যেতে পারে

তবে সবচেয়ে বড়ো কথা, সুষ্ঠুভাবেকোয়েল পালন করতে হলে তাদের থাকার জায়গা বাবাসস্থান, খাবার জায়গা ইত্যাদিস্থানগুলোশুকনা এবং পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন থাকতে হবেপর্যাপ্তআরৌ বাতাসেরব্যবস্থা থাকতে হবেসেই সাথে প্রয়োজনীয় সুষমতখাদ্যের সরবরাহ রাখতে হবেতবেই কোয়েল পালন করে তারমাংসও ডিম উৎপাদনে সঠিকভূমিকা রাখা সম্ভব হবে

লেখক: আবদুল্লাহ আল মামুন, উপ-পরিচালক, বংলাদেশ কৃষি গবেষনাইনস্টিটিউট