শিং মাছের পোনা উৎপাদনপদ্ধতি -
 
(গত সংখ্যার পর)প্রথমে প্রজননক্ষম উপযোগী স্ত্রী ও পুরুষ শিং মাছ সমান অনুপাতে প্রজনানঙ্গ বরাবরউপরের মাংশল স্থানে ইঞ্জেকশন করে পানির হাউজে ছেড়ে দিলে চলবেতবে পুরুষ মাছস্ত্রী মাছের তুলনায় কিছু বেশি দিলে সব স্ত্রী শিং মাছই ডিম ছাড়ে এবং ডিম নিষিক্তেরহার ভাল হয়ইঞ্জেকশন করে প্রাকৃতিক উপায়ে ২ ভাবে ডিম সংগ্রহ করাহয়১.হাঁপা পদ্ধতি এবং ২. সিস্টার্ণ পদ্ধতি
 
হাঁপা পদ্ধতি : প্রথমে দৈর্ঘ্যে ১২ ফুট, প্রস্থে ৮ ফুট এবং ১সে.মি. ফাঁক বিশিষ্ট পলিথিন জাতীয় একটি হাঁপা তৈরি করতে হবেতারপর এই হাঁপাটিকেহাউজে এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যেন হাঁপার তলদেশ হাউজের তলা থেকে কমপক্ষে ৬ ইঞ্চিউপরে থাকেএরপর হাউজের পানি ৩ ফুট উচ্চতায় ভরে কৃত্রিম ঝর্ণারব্যবস্থা করতে হবে যাতে স্রোতের সৃষ্টি হয়এরপর মাছগুলোকে ইঞ্জেকশন দিয়ে হাঁপাতে ছাড়তেহবেইঞ্জেকশনের ১০/১২ ঘন্টা পরে প্রাকৃতিকভাবে শিং মাছ প্রজনন করবেশিং মাছের ডিম হালকাআঠালোডিম দেয়ার পর ডিমগুলো হাঁপার ফাঁক দিয়ে সিস্টার্ণের তলায়পড়ে যাবেভোর বেলায় ডিম পারা শেষ হলে সেখান থেকে চিকন পাইপ দিয়েসাইফন করে ডিমগুলো সংগ্রহ করতে হবে
 
সিস্টার্ণ পদ্ধতি : মাছকে ইঞ্জেকশন করে সিস্টার্ণে ছেড়েদিতে হবে১০/১২ ঘন্টা পর শিং মাছ প্রাকৃতিকভাবে ডিম দেয়া শেষকরবেপরে ডিমগুলোকে সাইফন পদ্ধতিতে সংগ্রহ করতে হবেসংগৃহীত ডিমগুলো ছোটছোট সিস্টার্ণে (২/৩ ইঞ্চি উচ্চতায় পানিতে) ছড়িয়ে দিতে হবেপরে ওই সিস্টার্ণে০.৫ ইঞ্চি পিভিসি পাইপকে ছিদ্র করে ঝর্ণার ব্যবস্থা করতে হবেএভাবে ১৮ থেকে ২৪ঘন্টার মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা বের হবেবাচ্চা হওয়ার ৩ দিনের মধ্যে ডিম্বথলী শোষিতহয়ে রেনু পোনায় পরিণত হয়বাচ্চা ফুটে বের হওয়ার ৪৮ ঘন্টা পর ডিম্বথলী থাকা অবস্থাইখাবার খেতে পারেএরা স্বগ্রোত্রভোজী হয়ে থাকেতাই প্রতি ৩ ঘন্টাš-š-খাবার দিতে হয়খাদ্য হিসেবে এদের ছোট লাল কেঁচো বে¬ন্ডারে মিহি করেসপ্তাহ দেড়েক খাওয়াতে হয় অথবা আটিমিয়া ফুটিয়ে খাওয়ালে সবচেয়ে ভাল হয়আবার সিদ্ধ ডিমেরকুসুম ভাল করে ছেকে রেনুকে খাওয়ালে চলবেরেনুর বয়স ৪/৫ দিন হলে নার্সারি পুকুরে ছাড়তেহবেঅনেকেই শিং মাছকে চাপ প্রয়োগ পদ্ধতিতে রেনু উৎপাদনেরকথা বলে থাকেনআমার মতে চাপ প্রয়োগে শিং মাছের ডিম সংগ্রহকরে কোনদিনই বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়া যায় না
 
আতুর পুকুর পোনা পালন প্রযুক্তি : ৫ দিন বয়সের পোনাসিস্টার্ণ বা সিমেন্টের ট্যাংক থেকে চিকন রাবার নল দিয়ে সাইফন করে রেনু পোনা বেরকরে নার্সারিতে ছাড়তে হবেনার্সারি পুকুরের আয়তন ১৫/২০ শতাংশ হলে ভাল হয়প্রথমে নার্সারিপুকুরটির তলা শুকিয়ে হালচাষ করে শতাংশ প্রতি ৫-১০ কেজি গোবর ছিটিয়ে পুকুরে শ্যালোমেশিনের স্বচ্ছ পানি দিয়ে রেনু ছাড়তে হবে
 
আতুর পুকুর প্রস্তুতির উলে¬খযোগ্য দিক :
১. আতুরপুকুর বা নার্সারি পুকুরে যাতে কোন প্রকার ব্যাঙ, সাপ বা অবাঞ্ছিত কোনপ্রাণী না ঢুকতে পারে সে জন্য পুকুরের চারপাশ জাল দিয়ে ভালভাবে ঘের দিতেহবে
২.নার্সারি পুকুরে অতিরিক্ত খাদ্য প্রয়োগ করা যাবে না
৩. নার্সারি পুকুরেরখাদ্য হিসেবে ৫০% কুড়া এবং ৫০% শুটকি মাছের গুঁড়া একত্রে মিশ্রিত করে প্রতিদিনরেনুর ওজনের ২০০% প্রয়োগ করতে হবে
৪. এরা সাধারণত রাতে খেতে পছন্দকরেতাইখাবার রাতে ২বার প্রয়োগ করা যেতে পারে (শেষ)
 
-এ. কে. এম. নূরুল হক, স্বত্ত্বাধিকারী, ব্রহ্মপুত্র ফিস সিডকমপে¬ (হ্যাচারি), ময়মনসিংহ