শিং মাছের পোনা উৎপাদন পদ্ধতি-১
Posted by Nurjahan Chowdhury on Thursday, December 24, 2009
Under: Fish_Farm(দেশিমাছ)
শিং মাছের পোনা উৎপাদনপদ্ধতি-১
শিং মাছ একটি বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ।এই মাছটিঅত্যš- সুস্বাদু এবং জনপ্রিয়।আমাদের দেশে বেশ আগে হাওড়-বাঁওড়ে মাছটিরপ্রাচুর্যতা ছিল।কালের বির্বতনে প্রাকৃতিক অভয়ারণ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলেমাছটি আমাদের দেশ থেকে বিলুপ্ত হতে চলেছে।আমরা মাছটিকে ব্যাপকভাবে উৎপাদনেরজন্য ১৯৯৮-৯৯ সালে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ’৯৯ সালে ব্যাপকভাবেপোনা উৎপাদনেসক্ষমহয়েছি।এই মাছটি উৎপাদনকরতে গিয়ে বিভিন্ন হাওড়-বাঁওড় থেকে জীবিত ব্র“ড মাছ সংগ্রহ থেকেশুরু করে, ভৌত অবকাঠামো গড়ে তোলা দক্ষ জনবল তৈরি করাসহ অনেকপরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে পোনা উৎপাদনছিল অত্যš- ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল একটি কাজ।আমার সমসাময়িক সময়েগবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকেও শিং মাছের প্রজনন পদ্ধতি আবিষ্কারের কথা বলাহয়েছিল।এই প্রযুক্তিতে পুরুষ শিং মাছের টেস্টিজ কেটে স্টিপিংপদ্ধতিতে ডিম সংগ্রহের কথা বলা হয়েছে।বা¯-বে এই পদ্ধতিতে বাণিজ্যিকভিত্তিতে কখনই সফলতা বয়ে আনবেনা।কারণÑ
১. চাপ প্রয়োগ পদ্ধতিতে শিং মাছের ডিমের নিষিক্তের হারসাধারণত ৫% এর বেশি হয় না যা কখনই একজন খামারি বাণিজ্যিকভাবে সফলতা পাবেনা।
২.বাণিজ্যিকভাবে শিং মাছের পোনা উৎপাদনেরজন্য যে পরিমাণশিং মাছের স্ট্রিপিং এর প্রয়োজন সে পরিমাণ শিং মাছকে স্ট্রিপিং করাও এক দুঃসাধ্যব্যাপার।তা ছাড়া ওই প্রযুক্তিতে বাণিজ্যিকভাবে কেউ পোনাউৎপাদনকরতে পারবেনা।কিছুকিছু হ্যাচারি মালিকদের টেলিভিশনে সাক্ষাৎকারদিয়ে ওই প্রযুক্তিটিকে টিকিয়ে রাখার প্রানাš- চেষ্টা কিছুদিনলক্ষ্য করেছি।বা¯-বে সেইসব হ্যাচারিমালিকরাও কিন্তু ওই গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তি ব্যবহার করে না।শুধু টেলিভিশনেসাক্ষাৎকারেরলোভে এই অনৈতিকসাক্ষাতকার দিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু তারা বা¯-বে অনুসরণ করছে আমার প্রযুক্তি।প্রযুক্তি এমনই একটাজিনিস যা কোনদিন স্থায়ীভাবে ধরে রাখা সম্ভব হয় না।আমার ক্ষেত্রেওহয়েছে তাই।আমার এই প্রযুক্তিটি ১৯৯৯ সাল থেকে ব্যবহারকরছি।ধীরে ধীরে এই প্রযুক্তিটি ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।
শিং মাছের প্রজননে আমার নিুলিখিত প্রযুক্তি ব্যবহার করেস্বল্প বা বিশাল পরিসরে কৃত্রিম
প্রজননের মাধ্যমে খুব সহজেই চাহিদা মাফিক যে কেউ শিং মাছেরপোনা উৎপাদনকরতেসক্ষমহবেন।
প্রজননক্ষম মাছ সংগ্রহ ও পরিচর্যা : পরীক্ষায় দেখা গেছেযে, ১০/১১ মাস বয়সে একটি শিং মাছ প্রজননে সক্ষম হয়।সুস্থ ও সবল মাছশতাংশ প্রতি পুরুষ স্ত্রী মাছ ৫০ : ৫০ অনুপাতে ২০০টি ব্র“ড মাছ মজুদ করেনিয়মিতভাবে দেহের ওজনের ৫% হারে সম্পূরক খাবার দিতে হয়।৩০% ফিসমিল, ২০%সরিষার খৈল, ৩০% অটোকুড়া, ১০% মিটবোন, ১০% ভূষি ও ভিটামিনপ্রিমিক্স সহকারে সম্পূরক খাবার তৈরি করা যায়।
প্রজননের জন্য উপযোগী স্ত্রী ও পুরুষ মাছ বাছাই : সাধারণতএপ্রিলের প্রথম থেকে অক্টোবর মাস পর্যš- শিং মাছের প্রজননকাল।এই সময়ে স্ত্রীমাছের পেটে ডিম ভর্তি থাকে।পুরুষ মাছ স্ত্রী মাছ থেকে অপেক্ষাকৃত ছোট থাকে এবং পেটস্বাভাবিক অবস্থায় দেখা যায়।প্রজনন করার জন্য পুরুষ মাছ স্বাভাবিক উদর ও স্ত্রী মাছেরউদরে ডিম ভর্তি দেখে পরিপক্কতা সম্পন্ন মাছ বাছাই করে নিতে হয়।
শিং মাছের ইঞ্জেকশন পদ্ধতি : দুটি হরমোননের মাধ্যমে শিংমাছকে ইঞ্জেকশন করা যায়।যথা : পি. জি. দ্রবণ দিয়ে ইঞ্জেকশন : পুরুষ ও স্ত্রী মাছকেএকটি করে ডোজ দিতে হয়।স্ত্রী মাছকে ৩০ মি. গ্রা. হারে অর্থাৎ১ কেজি মাছের জন্য৩০ মি. গ্রা. পি. জি. এর দ্রবণ প্রয়োগ করতে হয়।এরপর প্রতি কেজিপুরুষ মাছকে ৫/১০ মি. গ্রা. পি. জি. এর দ্রবণ দিয়ে ইঞ্জেকশন করা যায়।
এইচ.সি.জি. দ্রবণ দিয়ে : স্ত্রী শিং মাছকে এইচ.সি.জি. দিয়েইঞ্জেকশন করতে হয়।এ ক্ষেত্রে ৫০০০ আই.ইউ এর এইচ. সি.জি. এর একটি অ্যাম্পলদিয়ে ২/৩ কেজি স্ত্রী মাছের ইঞ্জেকশন করা যায়।
এছাড়া কৃত্রিম প্রজননের জন্য প্রথমে মাছ বাছাই করতেহয়।এক্ষেত্রে সমপরিমাণ পুরুষ ও স্ত্রী মাছ বাছাইয়ের পর পি.জি.দ্রবণের ইঞ্জেকশন দিতে হয়।অন্য একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, পুরুষ মাছেরসংক্রাš- স্ত্রী মাছের চেয়ে দেড়গুণ দিলে শিং মাছ বেশি ডিমদেয়। (চলবে)
-এ. কে. এম. নূরুল হক, স্বত্ত্বাধিকারী, ব্রহ্মপুত্র ফিস সিডকমপে¬ক (হ্যাচারি), ময়মনসিংহ |
In : Fish_Farm(দেশিমাছ)