দেশি পাবদার চাষ প্রযুক্তি-১
Posted by Salim on Friday, December 18, 2009
Under: Fish_Farm(দেশিমাছ)
দেশি পাবদার চাষ প্রযুক্তি-১
পাবদা মাছ একটি বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ।এই মাছ অত্যš- সুস্বাদু এবংজনপ্রিয়।আমাদের দেশে বেশ আগে হাওড়-বাঁওড় -বিলে এই মাছটির পাওয়াযেত।কালেরবিবর্তনে প্রাকৃতিক অভয়ারণ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে এই মাছটি আমাদের দেশ থেকে বিলুপ্তহতে চলেছে।আমরা এই মাছটিকে ব্যাপকভাবে উৎপাদনেরজন্য অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ২০০২ সালে ব্যাপকভাবে পোনাউৎপাদনেসক্ষমহয়েছি।এইমাছটি উৎপাদনকরতে গিয়ে বিভিন্নহাওড়-বাঁওড় থেকে জীবিত ব্র“ড মাছ সংগ্রহ থেকে শুরু করে, ভৌত অবকাঠামো গড়ে তোলাদক্ষ জনবল তৈরি করাসহ ২ বছর ধরে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে পোনা উৎপাদনছিল অত্যš- ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয় বহুল একটি কাজ।সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণার হাওড়-বাঁওড়থেকে ব্র“ডমাছ সংগ্রহ ছিল এক বিরাট ঝুঁকির কাজ।৫% বেশি ব্র“ড মাছ বাঁচানো সম্ভবহয়েছিল।তারপর এই মাছগুলোকে কৃত্রিম খাবারে অভ্য¯- করারও ছিল এক কঠিনচ্যালেঞ্জ।কারণ একটি পুষ্টিকর খাবার ছাড়া ব্র“ড মাছ কখনও ভালমানেরবাচ্চা জন্ম দিতে পারে না।আর সে জন্য এই মাছকে ধীরে ধীরে কৃত্রিম খাবারেঅভ্য¯- করানোছিল এক বিরাট সাধনা এবং অভিজ্ঞতাও বটে।প্রতিটি দিনেই যেন এক নতুন নতুন অভিজ্ঞতায়পুলোকিত বোধ করছিলাম।অবশেষে মাছগুলো কৃত্রিম খাবারে অভ্য¯- হল।অন্য কারো পরামর্শ বাপ্রযুক্তি ছাড়াই ২০০০ সালে পরীক্ষামূলকভাবে পোনা উৎপাদনকরতে সক্ষম হয়েছিলাম যা আমাদের পরিশ্রমকে সার্থক করেতুলেছে।তারপর ব্র“ড থেকে রেনু, রেনু থেকে পোনা উৎপাদনহল।সারা দেশে পোনা বাজারজাত হল।এ থেকে সব খামারিরাইকৃত্রিম খাবারে অভ্য¯- পোনা পেল।যা থেকে পরবর্তিতে ব্র“ড মাছের সহজলভ্যতাএল।কিন্তুএর পেছনে কত গভীর নিরলস পরিশ্রম করতে হয়েছে তা শুধু আমিই জানি।অবশ্য আমি ব্যবসাওকরেছি।এখনস্বল্প পরিসরে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে অতিসহজেই আমার প্রযুক্তিতে যে কেউ চাহিদামাফিক পোনা উৎপাদনকরতে সক্ষম হবে বলেআমার বিশ্বাস। প্রজননক্ষম মাছ সংগ্রহ ও পরিচর্যা : পরীক্ষায় দেখা গেছেযে, ১০/১১মাস বয়সে একটি পাবদা মাছ প্রজননে সক্ষম হয়।সুস্থ ও সবল মাছ শতাংশ প্রতি পুরুষ ও স্ত্রী মাছ৫০ : ৫০ অনুপাতে ৭০/৮০টি মজুদ করে নিয়মিতভাবে দেহের ওজনের ৫% হারে সম্পূরক খাবারদিতে হয়।৩০%ফিস মিল, ৩০%সরিষার খৈল, ৩০% অটোকুড়া, ১০% ভূষি ও ভিটামিন প্রিমিক্্র সহকারে সম্পূরক খাবার তৈরি করাযায় অথবা বাজারের কৈ মাছের ফিড কাওয়ালেও চলবে।
প্রজননের জন্য উপযোগী স্ত্রী ও পুরুষ মাছ বাছাই : সাধারণতএপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে আগষ্ট মাস পর্যš- পাবদা মাছের প্রজনন কাল।এই সময়ে স্ত্রী মাছেরপেটে ডিম ভর্তি থাকে।এছাড়াও পাবদা স্ত্রী মাছের পাখনার কাঁটাগুলোর খাঁজগুলো খুবস্পষ্ট নয় যতটা না পুরুষের ক্ষেত্রে।প্রজনন করার জন্য মাছ ও মাছ বাছাইয়ের জন্যস্ত্রী মাছের উদরে ডিম ভর্তি দেখে পরিপক্কতা সম্পন্ন মাছ বাছাই করে নিতেহয়।
হরমোন ইনজেকশনের দ্রবণ তৈরি এবং ইনজেকশন দেওয়ার পদ্ধতি :কৃত্রিম প্রজননের জন্য প্রথমে মাছ বাছাই করতে হয়।এক্ষেত্রে সমপরিমাণপুরুষ ও স্ত্রী মাছ বাছাইয়ের পর পি.জি. দ্রবণের ইনজেকশন দিতে হয়।
১. প্রথমে প্রজননক্ষম উপযোগী স্ত্রী ও পুরুষ মাছ সমন অনুপাতেহাপাতে ছাড়তে হবে।
২. ১ম ইনজেকশনের সময় শুধুমাত্র স্ত্রী মাছকে ২/৩ মিঃ গ্রাঃহারে অর্থাৎ১ কেজি মাছের জন্য ৩ মিঃ গ্রাঃ পি.জি. এর দ্রবণ পাখনার কাটার নিচে প্রয়োগ করতেহবে।
৩. ১ ইনজেকশনের ৬ ঘন্টা পর প্রতি কেজি স্ত্রী মাছের জন্য ৪/৬মিঃ গ্রাঃ হারে ২য় ইনজেকশন এবং একই সাথে ২য় ইনজেকশনের সময় পুরুষ মাছকে ৪/৬ মিঃগ্রাঃ হারে ইনজেকশন দিতে হবে।২য় ইনজেকশনের ৭/৮ ঘন্টার মধ্য সাধারণত প্রাকৃতিকভাবে প্রজননক্রিয়ার মাধ্যমে ডিম ছাড়ে। (চলবে)
- এ.কে.এম. নূরুলহক
ব্রহ্মপুত্র ফিস সিড কমপে¬ক্স, ময়মনসিংহ |
In : Fish_Farm(দেশিমাছ)