কোথায় লাগাবেন কি গাছ
 
জুন, জুলাই ও আগস্ট মাস গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময়। তাই সঠিক স্থানে সঠিক চারা রোপনের সময় জুন, জুলাই ও আগস্ট । জেলা ও উপজেলা বৃক্ষমেলা কিংবা নার্সারি থেকে চারা সংগ্রহ করা যায়। সুস্থ, সবল, মধ্যমাকৃতির, পরবর্তী বংশধরদের কথা চিন্তা করে ফলজ ও ঔষধি গাছের চারা লাগানোর প্রতি বেশি নজর দেয়া উচিত। এতে ফল, ঔষধ এবং কাঠ সবই পাওয়া যায়। বন্যামুক্ত, আলোবাতাস চলাচল করতে পারে এবং
সূর্যালোক পড়ে এমন জায়গায় চারা রোপণ করা উচিত। দো-আঁশ, বেলে দো-আঁশ, এঁটেল দো-আঁশ, উর্বর, নিষ্কাশনযোগ্য ও উঁচু স্থানে চারা রোপণ করা উত্তম। কোথায় কোন চারা রোপণ করা উচিত তা জেনে নেই-
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে- মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে ও আশেপাশে শোভাবর্ধনকারী এবং ছায়া দানকারী গাছ যেমন, দেবদারু, নারিকেল, সুপারি, তাল, খেজুর, নিম, পাম, ঝাউ, কৃٍচূড়া, আম, কাঁঠাল, লিচু গাছ রোপণ করতে পারেন।
বসতবাড়ির দক্ষিণ পাশে- রোদ ও আলোর জন্য ছোট এবং কম ঝোপালো গাছ লাগাতে হবে। সুপারি, নারিকেল, নিম, দেবদারু, পেঁপে, পেয়ারা, লেবু, জাম্বুরা, ডালিম, মেহেদী, গাছ লাগানো যেতে পারে।
বসতবাড়ির পূর্ব-পশ্চিমে- মাঝারি উঁচু এবং মাঝারি ঝোপালো গাছ লাগাতে হবে। এতে সকাল-সـ্যায় বাড়ির আঙ্গিনায় আলো থাকবে। বাউকুল, আপেলকুল, সফেদা, আম্লপালি, লিচু, খেজুর, ডালিম, কলা, আতা, বেল, পেয়ারাসহ বিভিন্ন গাছ।
বসতবাড়ির উত্তরে- বসতবাড়ির উত্তরপাশে বড় ও উঁচু গাছপালা থাকলে ঝড়-তুফান প্রতিরোধ হয়। এখানে আম, কাঁঠাল, জাম, কামরাঙ্গা, মেহগনি, শিশু, সেগুন, হরিতকি, আকাশমণি, বাঁশ, ইত্যাদি গাছ রোপণ করা যায়।
পতিত জমিতে- সব ধরনের গাছ যেমন- আম, কাঁঠাল, জাম, কামরাঙ্গা, মেহগনি, শিশু, সেগুন, হরিতকি, আকাশমণি, দেবদারু, নারিকেল, সুপারি, খেজুর, নিম, পাম, ঝাউ, কৃٍচূড়া, বাঁশ ইত্যাদি।
হাট-বাজারে- ছায়দানকারী গাছ রোপণ করা উচিত। আম, কাঁঠাল, জাম, সেগুন, দেবদারু, সুপারি, খেজুর, নিম, পাম, কৃٍচূড়া, বটগাছ রোপণ করা উচিত।
রা¯-ার পাশে- উঁচু, ও ডালপালা ছাঁটাই করা যায় এমন গাছ রোপণ করা দরকার। মেহগনি, শিশু, সেগুন, হরিতকি, আকাশমণি, দেবদারু, নারিকেল, সুপারি, খেজুর, নিম, পাম, ঝাউ, কৃٍচূড়া, বাবলা, ইপিল ইপিল, শিমুল ইত্যাদি গাছ রোপণ করা যায়।
রেল লাইনের পাশে- মেহগনি, শিশু, সেগুন, আকাশমণি, দেবদারু, নারিকেল, সুপারি, খেজুর, নিম, পাম, শিমুল ইত্যাদি গাছ রোপণ করা যায়।
বাঁধের ধারে- শেকড় শক্ত এবং বি¯-ৃত এমন গাছ যেমন বট, আমড়া, বাঁশ, মেহগনি, শিশু, সেগুন, আকাশমণি, দেবদারু, নারিকেল, সুপারি, খেজুর ইত্যাদি গাছ রোপণ করা দরকার।
জমির আইলে- যেসব গাছের শেকড় কম বিত্বত কম ছায়াদানকারী, ডালপালা ছাঁটাই করা যায় যেমন- মেহগনি, দেবদারু ইত্যাদি গাছ রোপণ করতে হবে।
নিচু জমিতে- জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে এমন গাছ রোপণ করা দরকার। পিটালি, বেত, মূর্তা, বাঁশ, মান্দার, জারুল, হিজল, কদম ইত্যাদি গাছ নিচু জমিতে রোপণ করা যেতে পারে।
পুকুর পাড়ে- মাটি ভাঙ্গে না এবং শোভাবর্ধন করে যেমন সুপারি, নারিকেল, নিম, দেবদারু, পেঁপে, পেয়ারা, লেবু, ডালিম ইত্যাদি গাছ লাগানো যায়।
নদীর ধারে- পানি সহিٍু, শক্ত মজবুত ও বড় হয় এমন গাছ রোপণ করা উচিত। যেমন- শিমুল, ছাতিম, পিটালি, বেত, বাঁশ, মূর্তা, মান্দার, জারুল, হিজল, কদম ইত্যাদি।
উপকূলীয় অآলে- লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে, হালকা পাতাবিশিَ গাছ যেমন- সুন্দরী, ছৈলা, গরান, গেওয়া, গোলপাতা, মান্দার, কড়াই, বাবলা, নারিকেল ইত্যাদি গাছ রোপণ করা উচিত।
সরকারি-বেসরকারি নার্সারি, বর্তমানে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত বৃক্ষমেলা, এনজিও নার্সারি, ব্যক্তিগত নার্সারি, বিএডিসির নার্সারি, কৃষি গবেষণার নার্সারিতে ভাল চারা পাওয়া যায়। দھ“ত ফল পাওয়ার জন্য কলমের জন্য চারা রোপণ করা উত্তম। যে কোন পরামর্শের জন্য আপনার নিকটস্থ কৃষি পরামর্শ কেন্দ্র উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করুন।
কৃষিবিদ বকুল হাসান খান, হাটহাজারি, চট্রগ্রাম।